Post Thumbnail

মার্কিন নির্বাচন: বাংলাদেশের রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে?


সৈয়দ বোরহান কবীর: আজ বহুল প্রতীক্ষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নয়, সারা বিশ্ব। বিশ্বের রাজনীতিতে নানা মেরুকরণ ঘটবে এই নির্বাচনের ফলে- এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বের অঘোষিত অভিভাবক। বিশ্বকে শাসন করে। কাজেই এটি শুধু মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নয়, এটি হল বিশ্ব নেতা নির্বাচনের ভোট। যদিও গত কয়েক বছর ধরে আমেরিকার বিশ্ব নেতৃত্বের আসনটি টলটলায়মান। নানা রকম টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই যাচ্ছে। বিভিন্ন দেশে তার আন্তর্জাতিক অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দিকে চোখ রাঙাচ্ছে চীন। অন্যদিকে রাশিয়া বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করেছে। এরকম বাস্তবতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নির্বাচনের মাধ্যমে তার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারবে কি না, সেটা যেমন একটি চ্যালেঞ্জ, তার চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ হল অশান্তিময় এই বিশ্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন কী প্রভাব ফেলবে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ চলমান। গাজায় ইজরায়েলি বর্বরতা, অত্যাচার বন্ধ হয়নি। এই বৈরী সময়ে নতুন আমেরিকার নেতৃত্ব কি পরিবর্তন আনতে পারবে? তার চেয়েও বড় প্রশ্ন হলো বিভিন্ন দেশে দেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান এবং নীতি কতটুকু পরিবর্তন হবে বা আদৌ পরিবর্তন হবে কিনা? 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোখ বুলালেই দেখা যায় যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পাল্টাপাল্টি অবস্থান চলছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব অবশ্য এই ধরনের মন্তব্যকে নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের কোনও পরিবর্তন হবে না। তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে বিশ্বনেতা হিসেবে অভিহিত করেছেন। প্রেস সচিব যাই বলুন না কেন বাংলাদেশের রাজনীতি, সংবিধান, নির্বাচন নিয়ে নানা হিসেব নিকেশ চলছে। রাজনীতি নিয়ে আশা নিরাশার দোলাচল এখন দৃশ্যমান। সহজ সমীকরণ হিসাবে যেটি প্রচলিত ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে তা হলো মার্কিন নির্বাচনে যদি ডেমোক্র্যাটদের মনোনীত প্রার্থী কমলা হ্যারিস বিজয়ী হন, সে ক্ষেত্রে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান আরো শক্তিশালী হবে। মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে। অন্যদিকে যদি এই নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হন তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রভাব ক্ষুন্ন হবে বলে অনেকের অভিমত। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নাটকীয় কিছু ঘটারও আশাবাদ ব্যক্ত করছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং তার মিত্ররা। আসলে কী ঘটতে পারে এবং কেনই বা এই ধরনের ধারণা তৈরি হয়েছে সেটির দিকে আমরা একটু দৃষ্টি দিতেই পারি।

অনেকেই মনে করেন যে ৫ আগস্টে বংলাদেশের যে পট পরিবর্তন, সেই পট পরিবর্তনের পক্ষে ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটা বিশেষ ভূমিকা ছিল। বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রণাধীন মার্কিন প্রশাসন আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা রেখেছে বলে অন্তত আওয়ামী লীগ মনে করে। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক গণমাধ্যমে মার্কিন একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বাংলাদেশ থেকে কীভাবে টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জনমত করবে তার বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হয়েছে। জো বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের যে একটি দূরত্ব ছিল সেটি এখন সবাই মনে করে। ২০১৮ সাল থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের দূরত্বের প্রকাশ ঘটতে শুরু করে। প্রথমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৎকালীন সরকারকে গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানায়নি। এরপর র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। বাংলাদেশের নির্বাচন যেন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সেজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহত চাপ দিতে থাকে। এমনকি ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণাও দেয়া হয় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে অন্তত এক ডজন মার্কিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বাংলাদেশ সফর করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া ছিল একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। এসময় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পান পিটার ডি হাস। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর সরকারের সাথে তার দূরত্ব প্রকাশ্য হয়। তিনি বিরোধীদলগুলোকে দমন করা, সভা-সমাবেশ করার অধিকার না দেয়া, গুম, খুন ইত্যাদি নিয়ে প্রায়শই তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করতেন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের মধ্যেও এক ধরনের অস্বস্তি ছিল। 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি একাধিকবার বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। এমনকি তিনি এটাও দাবি করেছেন যে সেন্টমার্টিন দিলেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে ক্ষমতায় রাখবে। কিন্তু তিনি দেশের স্বার্থে সেন্টমার্টিন দিবেন না। যদিও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের পক্ষ থেকে ম্যাথু মিলার এই ধরনের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই যে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সবচেয়ে খুশি দেশগুলোর মধ্যে প্রথম হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অনেকে মনে করেছিল যে ২০২৪ এর নির্বাচনের আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কিছু করবে। কিন্তু নির্বাচনের আগে ভারতের প্রভাবেই হোক বা কৌশলগত কারণেই হোক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক ধরনের নীরবতা অবলম্বন করে। নির্বাচনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বার্তা দেয়। পিটার হাস বঙ্গভবনে গিয়ে শেখ হাসিনার চতুর্থ বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পরবর্তীতে তিনি বিভিন্ন মন্ত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। নির্বাচনের পর ডোনাল্ড লু বাংলাদেশে আসেন। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছিল সব কিছু ঠিকঠাক। কিন্তু এক সময় বোঝা যায় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ক্ষমতা পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকার ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে যে অবস্থানগুলো নিয়েছিল সেই অবস্থানগুলো ডেমোক্রেটরা পছন্দ করেনি বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে এবং এর যে একেবারেই সত্যতা নেই বিষয়টি তাও না। 

প্রশ্ন এসেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কেন ক্ষমতার পরিবর্তনের জন্য এত সোচ্চার ছিল? এর পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। প্রথম কারণ ছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে চীনের একটা গভীর সম্পর্ক এবং আওয়ামী লীগের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক নীতি। ফলে বাংলাদেশে মার্কিন স্বার্থ অনেকটাই ক্ষুন্ন হয়েছিল। দ্বিতীয় কারণ ছিল যে, আওয়ামী লীগ সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নানারকম বিষোদগার করেছিল, যেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অস্বস্তিকর ছিল। মার্কিন বলয় থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার চীন, রাশিয়া বলয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েছিল। এর জন্য প্রধানত দায়ী করা হয় তৎকালীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। তৃতীয়ত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যারা বাংলাদেশী মিত্র বিশেষ করে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে আওয়ামী লীগের দূরত্ব তীব্র হয়ে উঠেছিল। বিশেষ করে ড. ইউনুসের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ সরকারের অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোনভাবেই বরদাস্ত করেনি। সবকিছু মিলিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের যে সরকার পরিবর্তন চেয়েছে- এটি এখন আর কোনো গোপন বিষয় নয়। তাই ভারতের অবস্থানকে উপেক্ষা করেই বাংলাদেশের ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বলে ধারণা করা যেতে পারে৷ প্রশ্ন উঠেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই বাংলাদেশ নীতি কি শুধু ডেমোক্র্যাটরাই করেছিল? ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, যখন রিপাবলিকানরা ক্ষমতায় আসে, তখন তারা এই উপমহাদেশের বিষয়ে খুব একটা মাথা ঘামায় না। বরং উপমহাদেশের বিষয়গুলো দেখভাল করার জন্য তারা মূলত দায়িত্ব দেয় ভারতকে। এই উপমহাদেশে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, শান্তি রক্ষার জন্য মার্কিন-ভারত অভিন্ন নীতির কথা সকলেই জানে। কিন্তু ডেমোক্রেটদের এই উপমহাদেশের ব্যাপারে তাদের নিজস্ব নীতি কৌশল রয়েছে। কারো কারো মতে,  ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর যে নীতি এবং তাঁর নির্বাচনী প্রচার অভিযানে পরিকল্পনার কথা বলছেন, তাতে বাংলাদেশ এবং উপমহাদেশ নিয়ে তাঁর তেমন কোনও মাথাব্যথা নেই৷ বরং তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক ধরনের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে চাঙ্গা করতে চান। সেখানে শ্বেতাঙ্গ মার্কিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিকে বেশি মনোযোগ দিতে চান। ডোনাল্ড ট্রাম্পের এর আগের মেয়াদের চার বছর শাসনামলে তিনি অন্যান্য দেশগুলোর ব্যাপারে তেমন নাক গলাননি, বরং তিনি মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর কোরিয়ার সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের দিকেই বেশি মনোযোগী ছিলেন৷ তাছাড়া নির্বাচনের আগে আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি টুইট বার্তা নিয়েও হুলস্থুল চলছে, যেখানে তিনি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নিপীড়নের বিষয়টি নিয়ে বেশ খোলামেলা ভাবে কথা বলেছেন এবং এর নিন্দা জানিয়েছেন। এখান থেকেই অনেকে মনে করেন যে, বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যে নীতি, অবস্থান নিয়ে আছে সেই নীতি অবস্থান ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি নির্বাচিত হয় তাহলে পরিবর্তন হবে। এই পরিবর্তন আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক। বিশেষ করে ড. ইউনূসের সঙ্গে এখন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সেটি আর থাকবে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবার ভারত নির্ভর হয়ে পড়বে বলেও কারো কারো ধারণা। তবে এনিয়ে আওয়ামীপন্থিরা আবার ফানুস উড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতি এবং কূটনীতি যদি কেউ গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করেন তাহলে দেখা যাবে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যারাই হোয়াইট হাউসে আসুক না কেন তার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) মৌলিক নীতিগুলিতে কোনো পরিবর্তন হয় না। বিশেষ করে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি, যুদ্ধনীতি, বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মার্কিন অবস্থানের বড় ধরনের ইউটার্ন অতীতে লক্ষ্য করা যায়নি। তবে এটাও ঠিক যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আবার মহান বানাতে চান এবং তিনি অর্থনীতির উন্নয়ন বিশেষ করে মার্কিন নাগরিকদের সুরক্ষার ব্যাপারেই বেশি মনোযোগী। তাছাড়া ভারতের সঙ্গে তার এক ধরনের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক হিসেব নিকেশ আছে। এর আগের বার রাষ্ট্রপ্রধান তিনি ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন। সেখানে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে ভারতের প্রভাব বাড়তে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

ভারতের প্রভাব বাড়াটাকেই অনেকে আওয়ামী লীগের জন্য ইতিবাচক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তবে কোনও কোনও পর্যবেক্ষক মনে করছেন যে কমলা হ্যারিস ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ‘হিন্দু লবিস্ট গ্রুপ’ আছে তার সঙ্গে কমলা হ্যারিসের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এরা নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের পক্ষে। এই গ্রুপের ভোট টানার জন্যই আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই টুইট বার্তা দিয়েছিলেন। এর পেছনে বাংলাদেশ বিষয়ে কোনও প্রেম নেই। কমলা হ্যারিস যদি শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে ভারত মার্কিন রাজনীতিতে আরও বেশি প্রভাব বিস্তার করবে। মূল বিষয়টা সরাসরি বাংলাদেশের রাজনীতির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা, না করা নয়। বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই উপমহাদেশে কতটুকু ভারত নির্ভর থাকবে বা কতটুকু ভারত নির্ভর থাকবে না সেটাই এখানে মুখ্য বিবেচনার বিষয় বলেই আমার ধারণা। আর সেক্ষেত্রে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্প যিনিই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হোন না কেন এই নির্বাচনের পর মার্কিন কূটনীতি এবং রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব অনেক খানি বাড়বে। এবং এই প্রভাব যদি বাড়ে তাহলে বাংলাদেশের রাজনীতিতেও একটা নতুন মেরুকরণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না। তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মৌলিক নীতি থেকে কখনোই সরে যায় না। হোয়াইট হাউসে যেই আসুক না কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার অতীত অবস্থানগুলোকে ‘রিসেট বাটন’ দিয়ে মুছে ফেলে না। এটিই মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির মহত্ত্ব এবং বিশেষত্ব।

সৈয়দ বোরহান কবীর, নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত
ই-মেইল: poriprekkhit@yahoo.com


Comments

User Avatar

M.U.Ahmed

2 months ago

Recently, In.Front of N.Press Club Some People Crying for with SLOGAN Advocating Democrate Candidate Kamala Harris !!,,,, .....Why ? ON What Ground ? TRUMP'S Victory MUST Not Upset Bangladesh! But is Crystal Clear That Some Special VIP Persons' Would Suffer from"SleepLessNess" in Bangladesh.However,Mr. S.B.Kabir's Wrtings Explained Vividly.Unlimited Thanks.

Leave a Comment


Related Articles